বন্ধুর সঙ্গে ঢাকায় গিয়ে ২৬ টুকরা হলেন রংপুরের আশরাফুল, নেপথ্যে কী?
ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৯
ছবি : সংগৃহীত
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক (৪২) ঢাকায় বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে যাওয়ার পর হত্যা হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহের সামনে নীল রঙের ড্রামের মধ্যে থেকে ২৬ টুকরা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আঙুলের ছাপের মাধ্যমে লাশটি শনাক্ত করা হয়েছে।
নিহত আশরাফুল হকের পরিবারের বরাত দিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে তিনি বাবার সঙ্গে দেখা করার পর বন্ধু জরেজকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পরে বুধবার থেকে তার স্ত্রী লাকী বেগম বারবার ফোন করেও স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। ফোন ধরতেন তার বন্ধু জরেজ, যিনি বারবার আশরাফুল ব্যস্ত আছেন বলে জানাতেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বজনরা বদরগঞ্জ থানায় গিয়ে জানতে পারেন, ঢাকায় নীল রঙের ড্রামে আশরাফুলের খণ্ডিত লাশ পাওয়া গেছে। মৃতের শ্যালক আবদুল মজিদ জানিয়েছেন, নিহতের বন্ধু জরেজের সঙ্গে আর্থিক বিরোধের প্রেক্ষিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে পরিবারের ধারণা।
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আতিকুর রহমান বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ঢাকার রমনা ও শাহবাগ থানাকে তা জানানো হয়েছে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের কারণ ও জড়িতদের শনাক্তকরণের জন্য তদন্ত চালাচ্ছে।
নিহতের পরিবার ও গ্রামের মানুষ শোকাহত। আশরাফুল হকের স্ত্রী, দুই সন্তান ও বাবা-মা বাড়িতে ভীড় করছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকা বন্ধু জরেজের সঙ্গে ব্যবসায়িক সংযোগ ছিল। তবে জাপান যাওয়ার জন্য আশরাফুলের কাছ থেকে জরেজ টাকা ধার চেয়েছিলেন। স্থানীয়রা সন্দেহ করছেন— টাকা না পাওয়ায় বা আর্থিক দ্বন্দ্ব থেকে এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে।
এদিকে নিহতের মা এছরা খাতুন বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘মোর ব্যাটাক জরেজ খায়া ফেলাইলো। মোর ব্যাটাক অয় নিয়ে গেছে। টাকা আনার জন্য জরেজ মোর ব্যাটাক নিয়ে গেইছে।’
তবে হত্যাকাণ্ডে দু’জন বা তার বেশি লোক জড়িত থাকার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছে পুলিশ।
ঢাকার কোনো এলাকায় হত্যার পর মরদেহকে ড্রামে ভরে ফেলা হয় বলে পুলিশের ধারণা। মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল, ড্রামের একটি চাল ভর্তি ছিল, অপর ড্রামে হাত-পা-মাথাসহ খণ্ডিত ২৬ টুকরা মরদেহ কালো পলিথিনে মোড়ানো ছিল।
এমএইচএস

