
বাংলাদেশে এজেন্ট ব্যাংকিং খাতে গত এক বছরে রেকর্ড ভাঙা প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গ্রাহক সংখ্যা, আমানত, ঋণ বিতরণ ও প্রবাসী আয়ের সংগ্রহ— সব সূচকেই দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে এ খাতের সবকটি সূচক আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক বছরে নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ ৭২ হাজার। ফলে মোট হিসাবধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখের বেশি। ঋণ বিতরণ বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকা, যা এক বছরে প্রায় ৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। একই সময়ে প্রবাসী আয়ের সংগ্রহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ শতাংশেরও বেশি।
অমানতের ক্ষেত্রেও প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। ২০২৪ সালের জুনে যেখানে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৭৩ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুনে তা দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৬০৫ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে আমানত বেড়েছে ৫ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা।
তবে এ সময় কিছুটা নেতিবাচক দিকও আছে। গত এক বছরে এজেন্ট সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৭৩টিতে। আউটলেট সংখ্যা নেমে এসেছে ২০ হাজার ৫৭৭টিতে। যদিও লাইসেন্সধারী ব্যাংকের সংখ্যা অপরিবর্তিত থেকে ৩১টি রয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, ইসলামী ব্যাংক এককভাবে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ (৫৫ শতাংশের বেশি) বিতরণ করেছে। ডাচ-বাংলা ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
ব্যাংক এশিয়ার এমডি সোহেল আর কে হুসেইন মনে করেন, এজেন্ট ব্যাংকিং দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ গ্রামীণ মানুষের কাছে হাতের নাগালে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এখন এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আমানতের সঙ্গে বীমা সুবিধা চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।
আরও পড়ুন
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রান্তিক ও ব্যাংকবহির্ভূত জনগোষ্ঠীর কাছে সহজ ও নিরাপদ উপায়ে আর্থিক সেবা পৌঁছে দিতে এজেন্ট ব্যাংকিং এখন অন্যতম কার্যকর চ্যানেল। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা এ সেবা ধীরে ধীরে দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বড় শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এ প্রবৃদ্ধি শুধু পরিসংখ্যান নয়; বরং গ্রামীণ অর্থনীতিকে মূলধারার ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করার এক নিঃশব্দ বিপ্লব।’
এএইচএস/এমবি