Logo

বিনোদন

পরিচালকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে শায়লা সাথী!

Icon

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২৩:৪৩

পরিচালকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে শায়লা সাথী!

অভিনেত্রী শায়লা সাথী। ছবি : সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল ‘প্র্যাঙ্ক কিং’-এর প্রতিষ্ঠাতা, মালিক ও পরিচালক আর্থিক সজীব উদ্দিন এবং অভিনেত্রী শায়লা সাথীর বিরুদ্ধে একাধিক অনৈতিক ও অপেশাদার আচরণের অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে বলা হচ্ছে, বিবাহিত ও দুই সন্তানের বাবা সজীব একসময় অভিনেত্রী শায়লা সাথীর সঙ্গে ঢাকায় ‘লিভ টুগেদার’ করছিলেন। সে সময় সজীবের স্ত্রী ও সন্তানরা গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। পরে সজীব-সাথীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক জানাজানি হলে, তার স্ত্রী ঢাকায় চলে আসেন। এতেও অবশ্য সজীব-শায়লার ঘনিষ্ঠতা কমেনি, বরং তারা এখন ‘প্র্যাঙ্ক কিং’-এর অফিস রুম কিংবা শায়লার বাসায় একান্ত সময় কাটান বলে ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে। 

পাশাপাশি কাজের সুযোগের আশ্বাস দিয়ে নারীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে সজীবের বিরুদ্ধে। এছাড়া পুরোনো সদস্যদের অবমূল্যায়ন ও শায়লার একচ্ছত্র প্রভাবে পুরো টিম পরিচালনা হয় বলেও অভিযোগ এসেছে প্রাক্তন সদস্যদের পক্ষ থেকে। 

সূত্র জানায়, যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে সজীব ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে। মূলধারার নাটকে কাজ করার আগ্রহে তিনি ঢাকায় আসেন এবং ছোট-বড় কয়েকটি প্রজেক্টে কাজের চেষ্টা করেন। কাঙ্ক্ষিত সুযোগ না পাওয়ায় নিজেই ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি শুরু করেন। সেই লক্ষ্যেই চালু করেন ‘প্র্যাঙ্ক কিং’ নামের একটি চ্যানেল। শুরুর দিকে প্র্যাঙ্ক ভিডিও বানালেও পরে নাটকধর্মী কনটেন্ট নির্মাণে মনোনিবেশ করেন। 

অভিযোগ রয়েছে, কাজের সুযোগের আশ্বাস দিয়ে আর্থিক সজীব একাধিক নারী সহকর্মীর সঙ্গে অনৈতিক ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন। টিমের সদস্য শায়লা সাথীর সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা আলোচনা চলছিল। এই সম্পর্কের জেরেই টিম থেকে পুরোনো ও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন সদস্যকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়। তাদের মধ্যে আছেন তিথি, তামিম, মামুনুর রশিদ, ফারুক, সিয়াম, সাগর মির্জা এবং সজীবের আত্মীয় সামিয়াও।

ঘনিষ্ঠ সূত্র আরও জানায়, কলেজ জীবনে ‘মুক্তি’ নামে এক তরুণীর সঙ্গে আর্থিক সজীবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে সেই সম্পর্ক টেকেনি। ব্রেকাপের পরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মুক্তি। পরবর্তীতে ওই তরুণীর মৃত্যু ঘটে। এরপর চার মাস আত্মগোপনে ছিলেন সজীব। যদিও এই অভিযোগের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। 

সূত্র মতে, আর্থিক সজীবের বিবাহিত জীবন প্রায় সাত বছরের। স্ত্রী দুই সন্তানসহ আগে গ্রামে থাকতেন। সজীবের জীবনে চলমান সম্পর্ক ও বিতর্কের প্রেক্ষিতে তার স্ত্রী এখন ঢাকায় এসে থাকছেন।

ঘনিষ্ঠদের দাবি, এই পরিস্থিতি সজীবের পরিবারের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করেছে। যদিও স্ত্রী প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি।

জানা গেছে, তাদের ছেলে সন্তানের বয়স আনুমানিক পাঁচ বছর এবং মেয়ের বয়স দুই বছর।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আর্থিক সজীব ও শায়লা সাথীকে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে— উত্তরা, ৩০০ ফিট, পুরান ঢাকা ইত্যাদি এলাকায় ঘনিষ্ঠভাবে একত্রে দেখা গেছে।

ওই স্ক্রিনশটগুলোতে দেখা যায়, আর্থিক সজীবের ফেসবুক প্রোফাইলের পাশে ব্লু ভেরিফায়েড চিহ্ন রয়েছে, যা প্রোফাইলটির সত্যতা নিশ্চিত করে।

আরও অভিযোগ রয়েছে, শায়লা সাথী টিমে তার সমবয়সী বা সামান্য সিনিয়র নারী সহকর্মীদের উপস্থিতি একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। 

ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, তিনি মনে করেন এমন কেউ থাকলে তার প্রভাব খর্ব হতে পারে। ফলে চ্যানেলের পুরোনো নারী সদস্যদের কেউ কেউ ফিরতে চাইলেও তাদের বাধা দেওয়া হয়। অথচ সেই সদস্যরাই একসময় চ্যানেলটির জনপ্রিয়তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

‘প্র্যাঙ্ক কিং’-এর অন্যতম পুরোনো সদস্য সামিয়া সুলতানা দুই মাস আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি স্ট্যাটাসে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, সজীবের অতীত প্রেমের পরিণতি এবং নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

সামিয়ার অভিযোগ, ওই স্ট্যাটাসের জেরে সজীব তার বাসায় গিয়ে হত্যা করার হুমকি দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সামিয়া মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

অন্যদিকে, শায়লা সাথী নিজেকে ‘সিঙ্গেল’ দাবি করলেও তিনি আসলে ডিভোর্সি, এমন দাবি করেছেন কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী।

ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, তাদের গ্রামের দুইজন ব্যক্তি ফেসবুকে একটি পোস্টের মন্তব্যে শায়লার বৈবাহিক অবস্থা প্রকাশ করেন, যার স্ক্রিনশট ঘনিষ্ঠ সূত্র সরবরাহ করেছে। সূত্রের মাধ্যমে এই প্রতিবেদকের কাছে অর্ধ শতাধিক কথোপকথনের স্ক্রিনশট এসেছে।

স্ক্রিনশট অনুযায়ী, আর্থিক সজীবের একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক এবং টিমের সদস্যদের প্রতি অনৈতিক আগ্রহ স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। 

ওই স্ক্রিনশটগুলোতে দেখা যায়, তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে স্বীকার করছেন। এমনকি নানা কুরুচিপূর্ণ ইচ্ছার কথাও প্রকাশ করেছেন। এছাড়া টিমের সদস্য ও বাইরের মেয়েদের কাজের সুযোগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রমাণও মিলে স্ক্রিনশটগুলোতে।

শুধু কথোপকথন নয়, শায়লা সাথীর গলায় সজীবের দেওয়া ‘লাভ বাইটের’ ছবিও সরবরাহ করেছে সেই সূত্র, যা তাদের ঘনিষ্ঠতার ভিজ্যুয়াল প্রমাণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। সূত্র স্ক্রিনশটগুলোর একটি ভিডিও রেকর্ডিং সরবরাহ করেছে। 

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত দুইজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এ প্রসঙ্গে আর্থিক সজীব বলেন, ‘এ সব মিথ্যা। ও (শায়লা সাথী) আমার ছোট বোন। আমার টিমেই কাজ করে। মানুষ উল্টাপাল্টা ছড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে। আমি আইনের সহযোগিতা নিচ্ছি। এর আগে জিডি করা হয়েছে। আমি ফ্রি হয়ে কেস করব। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।’ 

অভিনেত্রী শায়লা সাথী অভিযোগগুলোকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘কিছু কুচক্রী মহল ভাইরাল হওয়ার জন্য এসব গুজব ছড়াচ্ছে। স্ক্রিনশট বানানো, মিথ্যা গল্প ছড়ানো হচ্ছে। আমি পাঁচ বছর ধরে সততার সঙ্গে কাজ করছি। কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার নাম নিয়ে ভাইরাল হতে চায়, আমি তাতে উৎসাহ দিতে চাই না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি কাউকে টিম থেকে বের করে দিইনি। কেউ নিজের ইচ্ছায় বের হয়েছে। আমি আমার কাজের জায়গায় নিষ্ঠাবান ও পেশাদার। ব্যক্তি আক্রমণের মাধ্যমে যারা ভাইরাল হতে চাইছে, তাদের বিরুদ্ধে আমি আইনি পদক্ষেপ নেব।’

অতীতের বিয়ে ও ডিভোর্স প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাথী বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমি একজন শিল্পী এবং শুধু আমার কাজ নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী।’

এসি/এইচকে 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

পরকীয়া

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর