
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় এডিস মশার বিস্তার রোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বুধবার (১১ জুন) সকালে রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক জরুরি সভায় এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া।
সভায় জানানো হয়, ডেঙ্গুর বিস্তার রোধকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী ১৪ জুন থেকে প্রতিদিন দ্বিগুণ হারে কীটনাশক প্রয়োগ করা হবে। এখন থেকে ফগার মেশিনের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০ লিটারের পরিবর্তে ৬০ লিটার কীটনাশক ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন
মশক কর্মীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, কীটনাশক সঠিক অনুপাতে প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি বাড়ির আঙিনা, ছাদ ও জমা পানি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে কার্যক্রম জোরদার করার ঘোষণা দেওয়া হয় সভায়। এ লক্ষ্যে অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে টিমের আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
ডেঙ্গু ও করোনা সংক্রান্ত কার্যক্রমের সমন্বয়ক হিসেবে সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সভায় আরও জানানো হয়, চলতি মাসেই নগর ভবনে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সেমিনার আয়োজন করা হবে এবং প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং ডেঙ্গু ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচারণা জোরদার করা হবে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, কর্পোরেশন সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (১০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ১৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে চার হাজার ৫৬৪ রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। আক্রান্তদের ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে একলাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৭৫ জন। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয় ও পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
এইচকে/