Logo

লাইফস্টাইল

মোবাইলে আসক্ত অন্তঃসত্ত্বা নারী, বিকল হচ্ছে শিশুর মস্তিষ্ক!

Icon

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:০৫

মোবাইলে আসক্ত অন্তঃসত্ত্বা নারী, বিকল হচ্ছে শিশুর মস্তিষ্ক!

গর্ভাবস্থায় মায়ের অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার হতে পারে গর্ভস্থ শিশুর ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর বিপদের কারণ। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্মার্টফোনে অতিরিক্ত সময় কাটালে শিশু স্নায়ুবিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। এমনকি এতে বাড়তে পারে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারের ঝুঁকি—সাম্প্রতিককালে এমনই উদ্বেগজনক তথ্য জানালেন ভারতের শীর্ষ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা।

এই বিষয়ে বিহারের চিকিৎসকদের করা এক গবেষণায় প্রাথমিকভাবে এ আশঙ্কা দেখা দেওয়ার পর সেটিতে একমত পোষণ করেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের চিকিৎসকরাও।

চিকিৎসকদের মতে, শিশুর স্নায়ুবিক গঠন শুরু হয় গর্ভাবস্থার তিন সপ্তাহ পর। সেই সময় মায়ের আচরণ ও দৈনন্দিন অভ্যাসের প্রভাব পড়ে স্নায়ুকোষের গঠনে। সন্তানসম্ভবা মায়ের স্মার্টফোন ব্যবহারের মাত্রা যদি অতিরিক্ত হয়, তাহলে তা শিশু মস্তিষ্কের নিউরনের স্বাভাবিক সংযোগ গঠনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. মিহির সরকার বলেন, অটিজম একধরনের নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার। শিশু যখন মায়ের গর্ভে থাকে, তখনই তার স্নায়ুকোষ তৈরি হতে থাকে। সেই সময় মা যদি অতিরিক্ত সময় মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তাহলে তা শিশুর ব্রেন ডেভেলপমেন্টকে প্রভাবিত করতে পারে।

তিনি আরও জানান, মায়ের গর্ভধারণের ৬ থেকে ২০ সপ্তাহ সময়ের মধ্যে শিশুদের নিউরোনগুলো মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এই কোষগুলো নিজেদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। সংযোগ যত ভালো হয়, শিশুর অনুভূতি, চিন্তাশক্তি ও ভাষা শেখার ক্ষমতা তত উন্নত হয়।

এই প্রসঙ্গে আরও উদ্বেগ প্রকাশ করে বিভাগীয় প্রধান ডা. কল্পনা দত্ত বলেন, মোবাইলের স্ক্রিন থেকে যে ব্লু লাইট বের হয়, তা মায়ের মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। ফলে ঘুমে সমস্যা হয়। অথচ মেলাটোনিনকে ‘স্লিপ হরমোন’ বলা হয়। মা যদি ঠিকমতো বিশ্রাম না পান, তাহলে শিশুর স্নায়ুবিক গঠনও ব্যাহত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অটিজমে আক্রান্ত শিশু চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে না, অনুভূতি বুঝতে পারে না, কথা বলার ক্ষেত্রে মারাত্মক দেরি করে। বর্তমানে প্রতি ৬৮ জন শিশুর মধ্যে একজন আক্রান্ত হচ্ছে অটিজমে—যা ভাবিয়ে তুলেছে চিকিৎসা মহলকে।

তবে এর প্রতিকারও রয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। তাদের পরামর্শ, গর্ভাবস্থায় মা যেন মোবাইলের ব্যবহার কমিয়ে বই পড়া ও কবিতা পাঠের মতো ইতিবাচক কাজে মনোযোগ দেন। তাতে শিশুর মস্তিষ্কের নিউরন গঠন ভালো হয় এবং ভবিষ্যতে সুস্থ বিকাশ সম্ভব হয়।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই যদি মায়েদের মধ্যে সচেতনতা না বাড়ানো যায়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে অটিজমের মতো নিউরো ডিজঅর্ডার আরও বেশি হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে সমাজে।

  • এটিআর
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর