
বাংলাদেশের খবর
ভয়ে দিন কাটছে বিআইডব্লিউটিএ’র প্রকল্প কর্মকর্তাদের
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উন্নয়ন কার্যক্রম কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো ধীরগতিতে চলছে। এদিকে রাজনিতক পট পরিবর্তনের পর বিভিন্ন অভিযোগ ও ট্যাগিংয়ের কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত-ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, ‘কর্মকর্তাদের দলীয় ট্যাগ দিয়ে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নাজেহাল করার চেষ্টা করছেন। বেশ কিছু অভিযোগও এসেছে। ফলে কর্মকর্তারা অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছেন। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
চলমান ১২টি প্রকল্প যেগুলো অনেকটাই নদীর চলাচল ও অবকাঠামো রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোর কাজও ধীরগতিতে চলছে। বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে কর্মচারীদের লক্ষ্যবস্তু করে তাদের আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত করছে। তারা অনৈতিক সুবিধা দাবি করেন এবং প্রত্যাখ্যান করলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, গোয়েন্দা সংস্থা ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) বিআইডব্লিউটিএ কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
কর্মকর্তারা বলেন, আগে কাজের বিভিন্ন ছবি ও নিউজ যুক্ত করে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়ে দলীয় ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যা প্রতিষ্ঠানটিতে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে এবং ও কাজে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।
বণিক বার্তা
হ্রাস পেলেও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে এখনো শুল্ক দিতে হবে ৩৬.৫%
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, নতুন ঘোষণায় এ পণ্যে প্রতিযোগী দেশগুলোর ওপর আরোপিত শুল্কহার কাছাকাছি হওয়ায় দেশের পোশাক শিল্প মালিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এ স্বস্তি ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলেও মনে করছেন তারা। কারণ বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানিতে আগে গড়ে সাড়ে ১৬ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতেন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকরা। এখন এর সঙ্গে ২০ শতাংশ যোগ হয়ে মোট শুল্ক পরিশোধ করতে হবে সাড়ে ৩৬ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রেতারা নতুন এ শুল্ক সমন্বয়ে রফতানিকারককে চাপ দিলে দেশের উৎপাদকরা আরো বেশি অটোমেশনে ঝুঁকতে পারেন। আর সেক্ষেত্রে কাজ হারাতে পারেন তৈরি পোশাক খাতের অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ শ্রমিকরা।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রফতানিতে আগে যে শুল্ক ধার্য ছিল বা এখন যেটা ধার্য হয়েছে সেটা মূলত পরিশোধ করেন আমদানিকারক। বাংলাদেশ থেকে বেশি রফতানি হয় কটন বা তুলাজাত সুতা-কাপড়ের তৈরি পোশাক। কোনো পোশাকে কটনের পরিমাণ ৫০ শতাংশের বেশি থাকলে শুল্ক পরিশোধ করতে হতো সাড়ে ১৫ থেকে সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর ৫০ শতাংশের বেশি সিনথেটিক বা কৃত্রিম আঁশজাত সুতা-কাপড়ের তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে পরিশোধ করতে হতো ২১ থেকে ২৪ শতাংশ পর্যন্ত। বাংলাদেশে ইপিজেডের আওতায় থাকা কারখানা থেকে সিনথেটিক সুতা-কাপড়ের পোশাক বেশি রফতানি হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া পোশাক মূলত কটনভিত্তিক।
দেশের পোশাক রফতানিকারকরা জানিয়েছেন, আমদানিকারক আগে গড়ে সাড়ে ১৬ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতেন বলে পণ্যের মূল্য কমাতে তাদের পক্ষ থেকে চাপ দেয়ার প্রবণতা ছিল। এরপর নতুন নীতি বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ট্রাম্প ঘোষণা করেন ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্কহার। ঘোষণাটিতে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ থাকা অবস্থায় পরিশোধযোগ্য অতিরিক্ত শুল্কহার ছিল ১০ শতাংশ। সেই অতিরিক্ত শুল্কভার ক্রেতাদের সঙ্গে রফতানিকারককে বহন করতে হচ্ছিল। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী এখন যে ২০ শতাংশ পরিশোধ করবেন ক্রেতারা, সেখানেও ভার বহনের বোঝা অবধারিতভাবেই থাকবে পোশাক রফতানিকারকদের ওপর।
কালের কণ্ঠ
বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে চার কোটি মানুষ
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ এসেছে, ঘরে মোবাইল ফোনও আছে, কিন্তু সন্তানকে পাঠানো যাচ্ছে না স্কুলে। রোগ হলে হাসপাতালে যাওয়া দূরের কথা, বিশুদ্ধ পানি বা শৌচাগার ব্যবস্থাও নেই। এমন জীবনযাপনই বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের বাস্তব রূপ। আর এমন অবস্থায় বাস করছে বাংলাদেশের অন্তত চার কোটি মানুষ। দেশের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রকাশিত বহুমাত্রিক দারিদ্র্যসূচক অনুযায়ী, আয় দিয়ে দারিদ্র্যের একটি দিক বোঝা গেলেও প্রকৃত চিত্র অনেক বেশি বিস্তৃত। এটি শুধু অর্থনৈতিক সংকট নয়, বরং শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং জীবনযাপনের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হওয়ার চিত্র তুলে ধরে। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ২০১৯ সালের বহু নির্দেশক সমীক্ষা (মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে) থেকে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে এই সূচক তৈরি করেছে।
এতে দেখা গেছে, ওই বছর বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪ শতাংশ, যা ২০২২ সালের আয়ভিত্তিক দারিদ্র্যের (১৮.৭ শতাংশ) তুলনায় অনেক বেশি।
সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. মনজুর হোসেন বলেন, দারিদ্র্য শুধু টাকা না থাকার নাম নয়। মানুষ হয়তো সামান্য আয় করছে, কিন্তু তার সন্তান স্কুলে যাচ্ছে না, চিকিৎসা পাচ্ছে না, বিশুদ্ধ পানি বা নিরাপদ ঘরও নেই। তারা বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার।
এই সূচকে তিনটি প্রধান মাত্রা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তাহলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবনমান। প্রতিটি বিভাগের মধ্যে আবার রয়েছে নির্দিষ্ট সূচক। কোনো ব্যক্তি যদি অন্তত এক-তৃতীয়াংশ সূচকে বঞ্চিত হয়, তাহলে তাকে বহুমাত্রিক দরিদ্র হিসেবে গণ্য করা হয়। সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা : ১৮ বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার ২৯ শতাংশ, যেখানে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই হার ২১ শতাংশ।
যুগান্তর
আওয়ামী আমলে বেপরোয়া লুটপাট, ব্যাংকে টাকার হাহাকার
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে ব্যাংক খাতে বেপরোয়া লুটপাটে সৃষ্ট ক্ষত কৌশলে আড়াল করে রাখা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে এই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা ছিল। এতে হিতে-বিপরীত হয়েছে। লুট হয়েছে ছাপানো টাকাও। বেড়েছে তারল্য ও ডলার সংকট; মূল্যস্ফীতির পারদ হয়েছে ঊর্ধ্বমুখী। অর্থনৈতিক মন্দা থেকে সৃষ্ট জনরোষ ও কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী আমলের লুটপাটের ঘটনা তদন্ত শুরু করলে ভয়াবহ চিত্র বেরিয়ে আসতে থাকে।
এখন পর্যন্ত ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকা নিয়ে গেছে লোপাটকারীরা। এর বড় অংশই পাচার করা হয়েছে। এসব অর্থ এখন খেলাপি হচ্ছে। আওয়ামী লীগের লুটপাটের কারণে বর্তমান সরকারের এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন লাখ কোটি টাকার বেশি। মোট খেলাপি দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ কোটি টাকার বেশি। এতে গত এক বছরে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট ছিল প্রকট। ছোট-বড় অনেক ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা নিয়মিত টাকা তুলতে পারেননি। যা এখনো অব্যাহত। সবমিলিয়ে আলোচ্য সময়ে টাকার জন্য একরকম হাহাকার পড়েছিল ব্যাংক খাতে।
তবে আশার কথা-বর্তমান সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপে বন্ধ হয়েছে ব্যাংক খাতে নতুন লুটপাট। ব্যাংকগুলোকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার প্রবণতাও বাতিল করা হয়েছে। পাচার করা টাকা উদ্ধারে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। দেশ ও বিদেশে কয়েকজন পাচারকারীর সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। ব্যাংক খাতকে পুনরুদ্ধার করার জন্য নেওয়া হয়েছে বহুমুখী কার্যক্রম। এর সুফল আসতে একটু সময় লাগবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে লুটপাট ও পাচার বন্ধ হওয়ায় ইতোমধ্যে ব্যাংক খাতে তারল্যের জোগান বাড়তে শুরু করেছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লুটপাটের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে বের করে নেওয়া হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এর বড় অংশই বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ফলে এসব টাকা ব্যাংকে নেই। আইএমএফের মতে, ব্যাংক খাত পুনরুদ্ধার করতে কমপক্ষে ৪ লাখ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে একীভূতকরণের তালিকায় থাকা ৫টি ব্যাংককে সচল করতে আগামী এক বছরের মধ্যে ২ লাখ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
বিএনপিতে ২০০ আসনে দেড় হাজার মনোনয়নপ্রত্যাশী
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। ৩০০ আসনের মধ্যে প্রায় ১০০ আসনে কারা প্রার্থী হবেন- তা অনেকটাই চূড়ান্ত। বাকি ২০০ আসনের জন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি। প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করা বিএনপির জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে দলটির একাধিক সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছেন।
হাইকমান্ডের নির্দেশমতে এবার প্রার্থী করার ক্ষেত্রে দলের ত্যাগী এবং ক্লিন ইমেজের নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। ১০০ আসনে তরুণ নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। বিএনপি সব সময় প্রতি আসনে অন্তত তিনজন করে সম্ভাব্য প্রার্থী ঠিক করে রাখে। এখন নতুন করে সংযোজন-বিয়োজন করে অধিকতর যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থীদের থেকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের নিয়ে সারা দেশে ৩০০ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। তারপর সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা হলে কিছু আসন ছেড়ে দেবে। না হলে সব আসনেই এককভাবে নির্বাচন করবে।
জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা সারা দেশের সব সংসদীয় আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন। বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য পুরোদমে প্রস্তুত। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করছে। তিনি বলেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। তাই ভোটারদের মধ্যেও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। বিএনপি এবার ত্যাগী এবং অধিকতর গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় নেতাদের প্রার্থী দেবে। তাই সর্বজন গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে অধিকতর যাচাইবাছাই করা হবে।
সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়। তখন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে ছিলেন। এরপর ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে দলটি। ২০১৮ সালে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন প্রায় আড়াই হাজার প্রার্থী। এখনো বিভিন্ন এলাকায় তিন থেকে পাঁচজন প্রার্থী আছেন। এবার দলের সুবিধাজনক পরিস্থিতির কারণে মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে ঐকমত্য হয়। এ ঘোষণার পর সারা দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রস্তুতি আরও জোরদার করে। এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে বিএনপি হাইকমান্ডের আশীর্বাদ পেতে বিভিন্ন কৌশলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে।
সমকাল
২৫৪ কোটি টাকার প্রকল্পের সমীক্ষা প্রতিবেদনই জাল
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মিরপুর-২ ও ৩-এ আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদন নকল বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেদনে যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সই ও সিল ব্যবহার করা হয়েছে, তাও নকল বলে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এই প্রকল্পে ১৮১টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করার কথা। এ জন্য ব্যয় ধরা হয় ২৫৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করার কথা।
গৃহায়ন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মিরপুর-২-এ কর্মচারীদের জন্য ‘গৃহায়ন কৃষ্ণচূড়া’ প্রকল্পে এক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সই ও সিল নকল করে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। একইভাবে মিরপুরের সেকশন-৩-এ আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন নকল। গত ১৮ মে প্রকল্প যাচাই কমিটির সভায় এ অনিয়ম ধরা পড়ে। গত ২৪ জুন গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাজমুল আলমকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজের টাকায় নিজের জমিতে এই ফ্ল্যাট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফলে নিজের মতো ফ্ল্যাটের কাজ ও ভাগ করতে নকল সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা নাজমুল আলম সমকালকে বলেন, গত ১৭ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এ অনিয়মের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত, তা চিহ্নিত করা যায়নি। কারণ, প্রকল্প দুটির সমীক্ষা প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে ২০২৩ সালের জুনে। তিনি বলেন, প্রতিবেদনে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে ২০২৩ সালের নথিপত্র দেখে অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সুপারিশ করা হয়েছে, এখন থেকে গৃহায়নের যে কোনো প্রকল্পের সমীক্ষা প্রতিবেদনের সঙ্গে চেয়ারম্যানকে একটি অঙ্গীকারনামা দিতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত হয়েছে। আরও তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ নুরুল বাসির সমকালকে বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নিয়ে কীভাবে সমীক্ষা প্রতিবেদন হলো, সেটা তদন্ত করে দেখছি। তবে গৃহায়নের কর্মচারীরা বলেছেন, সব দপ্তরে বিশেষ সুবিধা আছে, আমরা কেন পাব না? ফলে তাদের জন্য এই ফ্ল্যাট প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। ২০২৩ সালে এভাবে আরও একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছিল। তিনি বলেন, এখন কর্মচারীদের জন্য ফ্ল্যাট প্রকল্প না করে কোয়ার্টার প্রকল্প করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া মিরপুর সেকশন-৩-এ প্রকল্পটি নতুনভাবে সমীক্ষা করা হবে।
প্রথম আলো
দলগুলোর মতামত পাওয়ার পর জুলাই সনদ চূড়ান্ত হবে
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের কোন কোন ক্ষেত্রে কী কী সংস্কার আনা হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হলেও এখন পর্যন্ত জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত হয়নি। অন্যদিকে প্রস্তাবিত সংস্কারের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত বা আলোচনা হয়নি।
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ঠিক করা বা জুলাই সনদকে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা না হলে বেশ কিছু দলের সনদে সই না করার আশঙ্কা আছে। তাই এ বিষয়ে একটি ঐকমত্য হওয়ার পরই জুলাই জাতীয় সনদ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হতে পারে। এ কারণে দলগুলোর স্বাক্ষর নিয়ে জুলাই সনদ গ্রহণে একটু দেরি হতে পারে।
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিজেরা আগে আলোচনা করবে। সনদের খসড়া চূড়ান্ত করার পর বাস্তবায়ন পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার কথা ভাবছে কমিশন। জুলাই সনদকে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার বিষয়টি আলোচনায় আছে। যাতে ভবিষ্যতে এই সনদ বাস্তবায়নে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে। কয়েকটি রাজনৈতিক দলও কীভাবে জুলাই সনদকে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা যায়, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলাপ–আলোচনা করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা গত বৃহস্পতিবার শেষ হয়। দলগুলোর সঙ্গে দুই পর্বের আলোচনার মাধ্যমে আসা ঐকমত্য ও সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। জুলাই মাসের মধ্যে এই সনদ তৈরি করার লক্ষ্য ছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের। এ সময়ের মধ্যে আলোচনা শেষ হলেও সনদের খসড়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই পর্বে আলোচনার মাধ্যমে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলোসহ জুলাই সনদের একটি খসড়া দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ১৫টি দল তাদের মতামত দিয়েছে। সেখানে সনদের খসড়ার কিছু বিষয় নিয়ে কোনো কোনো দল আপত্তি জানিয়েছে। তাই এই খসড়া আবার সংশোধন করা হবে। প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজন করে নতুন খসড়া আবার দলগুলোর কাছে ফেরত পাঠানো হবে। তারপর খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। এটি করতে সপ্তাহখানেক লাগতে পারে।
মানবজমিন
হাসিনা পরিবারের প্লট দুর্নীতি, ক্ষমতায় থাকতেই নথি গায়েব
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজউকের ‘পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে’ প্লট নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দ নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা রাজউকের প্লট বরাদ্দের জন্য কোনো আবেদন না করেই, শুধুমাত্র একটি নোটের মাধ্যমে হাতিয়ে নেন রাজউক কূটনীতিক পাড়ার ৬০ কাঠার মূল্যবান জমি। ব্যাপক অনিয়ম সম্বলিত এসব বরাদ্দের নথিগুলো সংরক্ষিত থাকতো প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীনের তত্ত্বাবধায়নে। কিন্তু ৫ই আগস্টের পরে নথির ৬টি অংশের মধ্যে ৫টি অংশ যথার্থভাবে সংরক্ষিত থাকলেও অংশ-২ টি সরিয়ে ফেলেন আসামিরা।
৫টি নথি উদ্ধার হওয়ায় এবং এসব নথির নোটাংশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহউদ্দীনের স্বাক্ষর থাকায় তদন্ত করে আসামিদের মুখোমুখি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। গায়েব হওয়া নথির অংশ-২ এ মূলত শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তার পরিবারের দুর্নীতির মাধ্যমে প্লট বরাদ্দের তথ্য ছিল। ফলে প্লট বরাদ্দের জন্য বিভিন্ন চিঠি এবং উক্ত নথির সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তদন্ত সংস্থার পক্ষে। এ ছাড়া নথিতে নোট উপস্থাপনকারী থেকে নোট অনুমোদনকারী পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, পদবি, ঠিকানা ও তাদের বর্তমান কর্মস্থল, ঠিকানা জানাও সম্ভব হয়নি। দুর্নীতির এসব তথ্য গোপন করতে নিজে এবং অপরকে শাস্তি থেকে বাঁচাতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহউদ্দীন পরস্পর যোগসাজশে নথিগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ গায়েব করে দেন। এমনই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে দুদকের দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনে।
রাজউক কর্তৃক পরিচালিত ‘পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে’ প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ৬টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১শে জুলাই অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আগামী ১১ এবং ১৩ই আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ আদেশ দেন। আইন অনুযায়ী প্লট বরাদ্দের জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন না করেই ৬০ কাঠার ৬টি প্লট হাতিয়ে নেয়া, ঢাকা শহরে স্থায়ী আবাসন থাকা সত্ত্বেও হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্লট বরাদ্দ নেয়াসহ কয়েকটি অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি) এর বিরুদ্ধে বিচার কাজ চলছে। এসব অভিযোগে আরও ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।