চারঘাটে রেলপথ অবরোধ : আগেই জানতো সবাই, রেল জানল পরে

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১৯:০৪
-6848f10325ce6[1]-68497ee5b3323.jpg)
লাল পতাকা টাঙিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছবি : বাংলাদেশের খবর
রাজশাহীর চারঘাটের নন্দনগাছী রেলওয়ে স্টেশনের যাত্রাবিরতি এবং স্টেশন সংস্কারের দাবিতে বুধবার (১১ জুন) সকাল থেকে স্থানীয়দের অবরোধ কর্মসূচিতে আটকে পড়ে চারটি আন্তঃনগর ট্রেন। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধের কারণে বনলতা, মধুমতি, সিল্কসিটি ও সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসের যাত্রীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে।
যাত্রীরা বলছেন, আগেই অবরোধের ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও রেল কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
সিল্কসিটি এক্সপ্রেসে ঢাকামুখী যাত্রী হানজিম হুদা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘নন্দনগাছী স্টেশনে অবরোধের ঘোষণা তো আগেই ছিল। রেল কর্তৃপক্ষ চাইলে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আগেভাগেই সমাধান করতে পারতো। কিন্তু তারা দেরিতে নড়েচড়ে বসেছে। ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে আমাদের।’
বনলতা এক্সপ্রেসের যাত্রী বাকি বিল্লাহ ও মাহবুব হোসেন বলেন, হঠাৎ ফাঁকা জায়গায় রোদে ট্রেন থেমে গেল। আমরা পরিবার নিয়ে ছিলাম, অনেক কষ্ট করেছি। স্টেশন না থাকায় নামাও সম্ভব হয়নি। যদি আগে থেকেই জানাতো, তাহলে হয়তো আমরা পরে রওনা দিতাম। রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় আমরা কষ্ট পেলাম।
সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসের যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই রুটে অনেক রোগী রাজশাহী আসেন চিকিৎসার জন্য। ট্রেনের বগিতে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। গরমে তাদের খুব কষ্ট হয়েছে।’
পাকশী জিআরপি থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।’
অবরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আহম্মদ হোসেন মাসুম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘আজ (বুধবার) অবরোধ শুরুর পর আমরা বিষয়টি জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধান করেছি। পরে স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চলছে।’
উল্লেখ্য, স্থানীয় বাসিন্দারা নন্দনগাছী স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি (স্টপেজ) ও স্টেশন সংস্কারের দাবি জানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় তারা রেলপথ অবরোধ করেন। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রায় তিন ঘণ্টা পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন। এরপর রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনকারীদের দাবি, ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষী নন্দনগাছী স্টেশনে বর্তমানে কেবল দুটি লোকাল ট্রেন থামে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনে প্রতিদিনই একাধিক আন্তঃনগর ট্রেন সাময়িকভাবে দাঁড়ায় ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য। স্টেশনটির অবকাঠামো জরাজীর্ণ, জনবল সংকট প্রকট— একসময় যেখানে ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকতেন, এখন সেখানে মাত্র একজন পোর্টারম্যান কাজ করছেন।
এদিকে, আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আগামী ২০ জুনের মধ্যে তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে পুনরায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এমএনএম/এইচকে