
গ্রাফিক্স : বাংলাদেশের খবর
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাংবিধানিক এ সংস্থাটি চলতি সপ্তাহে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে। নির্বাচনী রোডম্যাপে সাধারণত নির্বাচনের আগের প্রস্তুতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়। এবার রোডম্যাপে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ।
নির্বাচন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হতে পারে। সংলাপে ভোট প্রক্রিয়া, দলগুলোর বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব এবং ভোটের সামগ্রিক প্রস্তুতি তুলে ধরা হবে। যেহেতু ভোটকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ স্পষ্ট, তাই এবারের সংলাপে সবার নজর থাকবে। ইসিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে একমাস সময় রেখেছে এজন্য।
রোডম্যাপ অনুযায়ী ভোটের আগে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংসদীয় সীমানা পুনঃনির্ধারণ। নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন আবেদন ও বিশেষ কমিটির পরামর্শের ভিত্তিতে ৪০টি সংসদীয় আসনে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। এসব পরিবর্তনের ওপর স্থানীয় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা আপত্তি জানিয়েছেন। ইসি এসব আপত্তি বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য ইসির বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ১৪৩টি দল ১৪৭টি আবেদন করেছে। প্রাথমিক বাছাই শেষে ২২টি দলের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। অক্টোবরের প্রথম দিকে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন চূড়ান্ত করা হবে।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের জন্য খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জন ভোটার অন্তর্ভুক্ত। খসড়া তালিকার ভিত্তিতে ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে। এবার প্রথমবারের মতো তরুণ ভোটারদের জন্য ভোটার তালিকায় সংশোধন আনা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটারযোগ্য তরুণদেরও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে। এছাড়া প্রবাসী ভোটারদের জন্য অনলাইন নিবন্ধন ও পোস্টাল ব্যালটের বিষয়টি নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
নির্বাচনী রোডম্যাপে স্থানীয় ও দেশীয় পর্যবেক্ষকের নিবন্ধন, আচরণবিধি জারি, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, তফসিল ঘোষণা, আইনশৃঙ্খলা সভা এবং নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করবে। গত তিনটি নির্বাচন ভালো না হওয়ায় ভোটের ওপর আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ মানুষের মধ্যে নির্বাচন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা সৃষ্টি করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে ভোটে আস্থা ফেরানোর চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নির্বাচনী রোডম্যাপ ভোটে আস্থা ফেরাতে সহায়ক হবে।’
এমএইচএস