Logo

জাতীয়

বইমেলা ডিসেম্বরেই, তারিখ ঘোষণা

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:২১

বইমেলা ডিসেম্বরেই, তারিখ ঘোষণা

গত বইমেলার প্রস্তুতির ব্যস্ততা/ ছবি : বাংলাদেশের খবর

অমর একুশে বইমেলা-২০২৬ আগামী ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত তারিখ নির্ধারণ সংক্রান্ত সভায় এই সময়সূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবছর ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমির পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পবিত্র রমজানকে বিবেচনায় নিয়ে এবার বইমেলার সময়সীমা ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা হলো। ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী মেলার প্রস্তুতি কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে বইমেলা সম্পর্কিত নীতিমালা ও অংশগ্রহণের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবে বাংলা একাডেমি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে বইমেলা ২০২৬-এর তারিখ নির্ধারণ সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, একাডেমির সচিব, পরিচালকবৃন্দ এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির প্রতিনিধিরা।

এর আগে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতিসহ তিনটি প্রকাশনা সংগঠন লিখিতভাবে বইমেলা এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিল। সমিতি তিনটি সম্ভাব্য সময়ও প্রস্তাব করে— ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি, ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি এবং ৫ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি।

প্রকাশকদের যুক্তি ছিল, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মেলার নিরাপত্তায় যথাযথ মনোযোগ দিতে পারবে না। তাছাড়া নির্বাচনের পরে বইমেলার আবহ নষ্ট হয়ে যাবে, আবহাওয়াও অনুকূলে থাকবে না।

সে সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির আগে আয়োজন না করলে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ও মানুষের অংশগ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আবার এপ্রিলের দিকে ঝড়-বৃষ্টির কারণে মেলার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ডিসেম্বর-জানুয়ারিই সবচেয়ে যৌক্তিক সময়।’ 

উল্লেখ্য, অমর একুশে বইমেলা সাধারণত প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়ে চলে মাসব্যাপী। বাংলা একাডেমি আয়োজিত এই মেলাটি ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত হয়। এটি সাধারণত বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়। মাঝখানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মার্চ-এপ্রিল মাসেও বইমেলা অনুষ্ঠিত হতে দেখা গেছে। এ বছর ডিসেম্বরে বইমেলা হলে একই বছরে দুইবার মেলা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

একুশে বইমেলা শুরুর ইতিহাস 

১৯৭২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির ফটকে চট বিছিয়ে বই বিক্রি শুরু করেন প্রকাশনা সংস্থা মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা চিত্তরঞ্জন সাহা। ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমির একুশের অনুষ্ঠানমালার সঙ্গে সংগতি রেখে একাডেমির ভেতরে ছোট একটি স্টল স্থাপন করে বই বেচে মুক্তধারা। ১৯৭৭ সালে মুক্তধারার সঙ্গে আরও অনেকে যোগ দেয়, সেই থেকে একুশে বইমেলার সূচনা।

১৯৭৮ সালে বাংলা একাডেমির তৎকালীন মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী একাডেমিকে এ বইমেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। এর পরের বছরই বাংলাদেশ পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক সমিতি মেলার সঙ্গে যুক্ত হয়। মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ১৯৮৩ সালে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামে এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তা করা যায়নি। পরের বছর থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সূচনা হয় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। ১৯৮৪ সাল থেকে বাংলা একাডেমি সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নাম দিয়ে ধারাবাহিকভাবে মেলা পরিচালনা করছে। ২০২১ সাল থেকে মেলার নামকরণ করা হয় ‘অমর একুশে বইমেলা’।

মেলা শুরু থেকেই একাডেমি প্রাঙ্গণে হয়ে এলেও ধীরে ধীরে পরিসর বাড়তে থাকায় জায়গার সংকুলান হচ্ছিল না। পরে একাডেমির সামনের সড়কেও বইমেলার স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে বরাদ্দ দেওয়া হয় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। তবে মেলার মূল মঞ্চ এবং তথ্যকেন্দ্র রাখা হয় একাডেমি প্রাঙ্গণেই। বিগত এক দশক ধরে বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হচ্ছে বইমেলা।

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

ব্রেকিং নিউজ বইমেলা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর