Logo

নির্বাচিত

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

ইউনূস-তারেক বৈঠক আয়োজনের নেপথ্যে!

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ০৯:২৪

ইউনূস-তারেক বৈঠক আয়োজনের নেপথ্যে!

বাংলাদেশের খবর
রাজনৈতিক সংকটের শঙ্কা
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন (২০২৬ সালের প্রথমার্ধে) ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র টানাপড়েন চলছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের দাবি জানিয়ে আসছে, বিশেষত ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই। 

অপরদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে হবে। প্রধান উপদেষ্টা এমন ঘোষণা দেওয়ার পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে। তার এ ঘোষণার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। দলটি তাদের পুরোনো অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচন এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পরপর রাতেই বৈঠকে বসে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি থেকে বিএনপি এক চুলও নড়বে না। এর মধ্যে আগামী শুক্রবার লন্ডন সময় বেলা ১১টায় তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বৈঠকের ফলাফলের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিধারা। যদি সমঝোতা হয়, তাহলে নির্বাচনি রোডম্যাপ স্পষ্ট হবে। সংস্কার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হতে পারে। আর আলোচনা ব্যর্থ হলে বাড়তে পারে রাজনৈতিক অস্থিরতা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধী অবস্থান, অন্যদিকে একটি আস্থাশীল ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য জনগণের আকুতি। 

এ পরিস্থিতিতে লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকটি নিছক একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং এটি রাজনৈতিক বরফ গলানোর একটি বড় সুযোগ। এই আলোচনা যদি বিশ্বাসযোগ্য ও বাস্তবসম্মত সমাধানমুখী হয়, তবে তা কেবল বিএনপি বা সরকারের জন্য নয়, বরং দেশের গণতন্ত্র ও রাজনীতির ভবিষ্যতের জন্যই একটি ইতিবাচক দিকচিহ্ন হয়ে উঠবে। 

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দূরদর্শী হস্তক্ষেপে দলের কঠোর অবস্থান নমনীয় হয়েছে বলে জানা গেছে। লন্ডনে অনুষ্ঠেয় বৈঠককে ঘিরে যেমন তৈরি হয়েছে বিপুল প্রত্যাশা, তেমনি এর ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে দেশের আগামী দিনের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি। 

যুগান্তর
রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে দিনক্ষণ সব চূড়ান্ত। একজন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান, অপরজন দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির কান্ডারি। নির্বাচন হলে জনগণের ভোটে যে দলটির সরকার গঠন করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। আবার যে দলটি তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়।

সঙ্গত কারণে এ বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে বৈঠকের খবরটি নিশ্চিতভাবে ছড়িয়ে পড়লে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের স্বস্তির বাতাস বইতে শুরু করে। বিশেষ করে যখন নির্বাচনের সময় নির্ধারণসহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে রাজনীতিতে এক ধরনের অস্বস্তি ও গুমোট পরিস্থিতি ঘুরপাক খাচ্ছিল, তখন ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের আসন্ন বৈঠককে দেশের জন্য শুভসংবাদ বলে অভিহিত করেছেন অনেকে। 

এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকটিকে রীতিমতো টার্নিং পয়েন্ট বলে আখ্যা দিয়েছেন। এর সঙ্গে তিনি কতগুলো বিশেষণ যুক্ত করে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে নতুন এক দিগন্তের সূচনা হতে পারে। সমাধান হয়ে যেতে পারে বিদ্যমান অনেক সমস্যার। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলও এ বৈঠকটিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন। তাদের মতে, রাজনীতি খুবই কঠিন নীতি। এখানে সবাই মুখে নীতিকথা বললেও আড়ালে ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ ঠিকঠাক চলে। ফলে এ মুহূর্তে মাঠের বড় খেলোয়াড় বিএনপি হলেও গণ-অভ্যুত্থানের পরে নির্বাচনমুখী অনেক দলই নানাভাবে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চায়। বিএনপি মুখে যতই বলুক, ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সরকার করবে-তথাপি সবাই ভোটের আগে আসন ভাগাভাগিসহ নানা লাভ-ক্ষতির হিসাব মিলিয়ে নিতে ব্যস্ত। এসব কারণে রাজনীতির অন্দরমহল বেশ গরম।

তারা মনে করেন, খোলা চোখে রাজনীতিতে যা আমরা দেখছি-এটাই আসল দেখা নয়। পুরো চেহারাটা দেখতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে বৈকি। এছাড়া ভূরাজনীতির নানা স্বার্থের খেলার মধ্যে রাজনীতি সরলরেখায় চলতে পারছে না। বিপদ বুঝে বারবার গতিপথ পালটাতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রাপথও সরলরেখায় এগোতে পারছে না। তবে এমন এক শ্বাসরুদ্ধকর রাজনৈতিক ম্যাচ খেলার মধ্যে ‘শেষ বল’ বলে কিছু না থাকলেও লন্ডন বৈঠকের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট সংকটের আপাতত একটা সমাধান মিলতে পারে।

সমকাল
চামড়ার দাম নিয়ে শত প্রশ্ন এবং একটি ‘লবণরেখা’
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে প্রতিবছর কেন একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়? সাধারণ কোরবানিদাতা ও মৌসুমি ছোট ব্যবসায়ীরা কেন বলেন, চামড়ার ন্যায্য দাম পাননি? কেন কিছু কিছু এলাকা থেকে চামড়া ফেলে দেওয়া বা মাটিতে পুঁতে ফেলার খবর আসে? কেন বিভিন্ন এলাকায় চামড়া পচে যায়, নষ্ট হয়? 

এর বিপরীতে প্রতিবছর ব্যবসায়ীরা কেন বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চামড়া কিনেছেন তারা। সরকার কেন বলে, এবার সবচেয়ে বেশি দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে। যারা সঠিক দাম পাননি বলে অভিযোগ করেন, তাদের ব্যাপারে কেন বলা হয়, তারা সময়মতো আড়তে না এনে চামড়া নষ্ট করে ফেলেছেন। তাই বিক্রি হয়নি।   

এ দুই বিপরীতমুখী বাস্তবতার মাঝে আছে একটি ‘লবণরেখা’। ভেঙে বললে, লবণমুক্ত চামড়া বনাম লবণযুক্ত চামড়া। শুরুর প্রশ্নগুলো ওঠে মূলত লবণ ছাড়া চামড়ার বিক্রয় পরিস্থিতি নিয়ে। আর বড় ব্যবসায়ী ও সরকারের বক্তব্যটি থাকে লবণ দেওয়া চামড়ার বাজার নিয়ে। 

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সব সরকারই প্রতিবছর চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করেছে তা মূলত লবণ দেওয়া চামড়ার। চামড়া কিনে লবণ দেন মূলত স্থানীয় মাঝারি ব্যবসায়ীরা। তারা সেগুলো ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেন। সারাদেশে এ ধরনের ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকের সংখ্যা ১ লাখের কাছাকাছি। এই তথ্য বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের। সরকারের চামড়া ব্যবস্থাপনার মধ্যে মূলত তারাই পড়েন। 

এর বাইরে সাধারণ কোরবানিদাতা থেকে পাড়া-মহল্লার তরুণ মৌসুমি ক্রেতা এবং মাদ্রাসা, মসজিদ ও এতিমখানার সংগ্রহ করা চামড়া এই ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে যায়। সংখ্যায় হিসাব করলে এটা কোটির কাছাকাছি। তারা লবণহীন চামড়া কেনাবেচা ও লেনদেন করেন। তাই অব্যবস্থাপনায় দাম পাওয়া বা না পাওয়া ভুক্তভোগীর সংখ্যাটা লবণযুক্ত চামড়ার ব্যবসায়ীদের তুলনায় বেশ বড়। ফলে না পাওয়ার আওয়াজটা অনেক বড় হয়।

কালের কণ্ঠ
রাজনীতিতে নতুন মোড়
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে দেশবাসীর কাছে প্রায় আচমকা এই ঘোষণা পৌঁছে যায় যে আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ঈদের আগের দিন বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণায় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ চলমান। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর জন্য এই ঘোষণা অস্বস্তির। বাম গণতান্ত্রিক জোটের দলগুলোর মধ্যেও ক্ষোভ।

‘ডিসেম্বরেই নির্বাচন চাই’, তাদের এই দাবি উপেক্ষিত হয়েছে বলে দলগুলো মনে করে। বিএনপি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং প্রধান উপদেষ্টা শব্দ চয়নে ‘রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম’ করেছেন বলে অভিযোগ করেন। বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ‘ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার অভিলাষ’ ফুটে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন। অন্যদিক জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি ইসলামী দল এবং এনসিপি নির্বাচনের ঘোষিত সময় সম্পর্কে শর্ত দিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে।

সার্বিক এই অবস্থায় কী হতে যাচ্ছে দেশের পরিস্থিতি—এই প্রশ্ন এখন সর্বত্র।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের আপত্তি উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টা যদি এপ্রিলেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অনড় থাকেন তাহলে দেশের রাজনীতিতে সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি হবে। ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের মিটিংয়ের পর আসলে বোঝা যাবে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে বা যাবে। আবার কারো মত, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত দেশের স্বার্থে মতপার্থক্য এড়িয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুসারে এপ্রিলের প্রথমার্ধেই নির্বাচন হচ্ছে—এই ধারণা মাথায় রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া।

বিশেষজ্ঞ মত : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের আপত্তি উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টা যদি এপ্রিলেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অনড় থাকেন তাহলে দেশের রাজনীতিতে সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি হবে।

কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনকে উৎসবমুখর পরিবেশে দেখতে চায়। রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচন এনজয় করে। এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে রোজার মাস, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা—এসব কারণে সাধারণ মানুষের কাছে নির্বানের আকর্ষণ নষ্ট হয়ে যাবে। বিএনপিসহ বিভিন্ন দল এসব বিবেচনা করেই এপ্রিলে নির্বাচনের বিরোধিতা করছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইউনূস-তারেক বৈঠক আয়োজনের নেপথ্যে!
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, ঈদের ছুটিতে রাজনৈতিক অঙ্গন ও সারা দেশে সাধারণ মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন আগামী শুক্রবার লন্ডনে অনুষ্ঠেয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক। 

সংসদ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ ও সম্ভাব্য রোডম্যাপ ঘোষণা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান আলোচনা ও বিরাজমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দেশের দুই শীর্ষনেতার এ বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। 

বিশেষ করে আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সরকারের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেই কারণে সরকারপ্রধানের সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির শীর্ষনেতা তারেক রহমানের বৈঠক আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছিল না। 

সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে সরকারের তরফে বারবার যোগাযোগের পর শেষ পর্যন্ত সোমবার রাতে বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি এ বৈঠকে রাজি হয়েছে। 

শুক্রবার লন্ডন সময় সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে সেন্ট্রাল লন্ডনে হাইড পার্কের কাছে ডরচেষ্টার হোটেলে দুই শীর্ষনেতার ওয়ান-টু-ওয়ান এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চার দিনের যুক্তরাজ্য সফরে প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে লন্ডন পৌঁছে এ হোটেলে অবস্থান করছেন।

রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে হারমোনি অ্যাওয়ার্ড নিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফরের ঘোষণার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে লন্ডনে নির্বাসিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক আয়োজনের আলোচনা শুরু হয়। 

গত বছরের ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাঁর এখনো সাক্ষাৎ হয়নি। তাই প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রথম যুক্তরাজ্য সফরে দুই নেতার দেখা-সাক্ষাতের সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে জল্পনকল্পনা শুরু হয়।

সরকারের তরফে বিএনপি মহাসচিবসহ দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে প্রাথমিক যোগাযোগের পর প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে আনুষ্ঠানিকভাবে সৌজন্য সাক্ষাতের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সফরের শেষ দিনে ১৩ জুন শুক্রবার সকালে বৈঠকের সময় নির্ধারণ করে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উভয় চ্যানেলে বিএনপির শীর্ষনেতার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। বিএনপিসূত্র বলছে, মূলত প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত আগ্রহ এবং সরকারের সিনিয়র উপদেষ্টাদের জোর চেষ্টার কারণে শেষ পর্যন্ত এ বৈঠক আয়োজনের উদ্যোগ সফল হতে যাচ্ছে।

ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে বিএনপি শুরু থেকেই এ বৈঠকে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করে আসছিল। তবু সরকারের কয়েকজন সিনিয়র ও প্রভাবশালী উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকটি আয়োজনের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। এ নিয়ে ঢাকা ও লন্ডনে কূটনৈতিক তৎপরতাও চলতে থাকে। আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান ইস্যুগুলো সমাধানের বিভিন্ন সম্ভাবনা তুলে ধরে বৈঠকে রাজি করাতে চেষ্টা চালানো হয়। 

বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয় যে এ বৈঠক একটি সুন্দর সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে শুভেচ্ছাবিনিময় ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা আগামী নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার নিয়ে তাঁর সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারবেন, সরাসরি তারেক রহমানের মুখে শুনতে পারবেন এসব বিষয়ে তাঁর মতামত ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

মানবজমিন
হামিদের ফেরা নিয়ে নানা আলোচনা
মানবজমিনের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিয়ে এক মাস পর দেশে ফিরেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ। রোববার দিবাগত রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকা পৌঁছান। তার দেশে ফেরার পর এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। গত ৭ই মে দিবাগত রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে আবদুল হামিদ ব্যাংকক যান। মামলা মাথায় নিয়ে তিনি কীভাবে দেশ ছাড়লেন এ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন দেখা দেয়। তুমুল সমালোচনার মুখে পুলিশের চারজন কর্মকর্তাকে শাস্তি দেয়ার কথা জানানো হয়। সাবেক প্রেসিডেন্টের দেশ ছাড়ার পরই জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জোরদার করে বিভিন্ন কর্মসূচি দেয়। যমুনা ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয়া হয়। চাপের মুখে বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। ওই সময় বলা হয়েছিল মামলা থেকেই বাঁচতে আবদুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন। 

তার দেশ ছাড়ার পেছনে সরকারের লোকজনের হাত আছে এমন আলোচনাও ছিল। কিন্তু চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় আব্দুল হামিদ গ্রেপ্তার হবেন কিনা, একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কীভাবে আইনের মুখোমুখি হবেন এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা আছে। গত সোমবার এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. অব. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। জবাবে তিনি জানান, আবদুল হামিদ দোষী হলে আইনের বাইরে রাখা হবে না। 

ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন রেহানা, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। গত ১৪ই জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি করা হয়।

বণিক বার্তা
রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি ২৭% হলেও ব্যাংক আমানত ৪ শতাংশের ঘরে
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহে উচ্চ প্রবৃদ্ধি চলছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে অব্যাহত প্রবৃদ্ধির এ হার ২৭ শতাংশেরও বেশি। প্রবাসী পরিবারগুলোর ব্যয় নির্বাহের পর রেমিট্যান্সের উদ্বৃত্ত অর্থ আমানত হিসেবে ব্যাংকে জমা থাকার কথা। তবে ব্যাংক খাতের আমানত প্রবৃদ্ধির চিত্রে সেটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) দেশে ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। রেমিট্যান্স হিসেবে আসা এ অর্থের এক-তৃতীয়াংশও ব্যাংকে আমানত হিসেবে জমা হলে তা ৮৮ হাজার কোটি টাকার বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু এ সময়ে দেশের ব্যাংক খাতে মাত্র ৭৫ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার আমানত বেড়েছে। যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাংকে আমানত বেড়েছিল ৮০ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের তুলনায় চলতি অর্থবছর ৪ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার আমানত কম বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে আমানত স্থিতি বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ হারে আমানত বেড়েছিল।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক এখন মেয়াদি আমানতের বিপরীতে ১০-১২ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। এত উচ্চ সুদের পরও মানুষ ব্যাংকমুখী হচ্ছে না। এ কারণে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। প্রত্যাশিত হারে আমানত না বাড়ায় ব্যাংক খাতে তারল্যের সংকটও কাটছে না। আস্থাহীনতার কারণেই মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে ভয় পাচ্ছেন বলে মনে করছেন তারা।

বেসরকারি কিছু ব্যাংকের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে মানুষ সরকারি ব্যাংকে আমানত রাখতে আসছেন বলে জানান সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘শরিয়াহভিত্তিক কয়েকটি ব্যাংকসহ বেসরকারি কিছু ব্যাংকের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে মানুষ আতঙ্কিত। ওই ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা আমানত তুলে নিচ্ছেন। তবে সোনালীসহ রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো। সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের আস্থা পুরোপুরি না ফেরা পর্যন্ত আমানত প্রত্যাশিত মাত্রায় বাড়বে না।’

আমানতের পাশাপাশি বিরাজমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগও বাড়ানো সম্ভব হবে না বলে মনে করেন মুসলিম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশী বিনিয়োগ আনার জন্য নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিদেশী বিনিয়োগকারী তো দূরের কথা স্থানীয় উদ্যোক্তারাও বিনিয়োগ করেন না। এটি বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা নয়, বরং এটি বাস্তবতা। ব্যাংক খাত সংস্কারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশকিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। আশা করছি, এর সুফল দেশের মানুষ ও অর্থনীতি পাবে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুনের শেষে দেশের ব্যাংক খাতে আমানতের স্থিতি ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চে এসে আমানতের এ স্থিতি বেড়ে ১৮ লাখ ১৮ হাজার ৬১১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। সে হিসাবে নয় মাসে আমানত বেড়েছে ৭৫ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার। এক্ষেত্রে আমানত বৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

  • এটিআর

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর