
- সবাইকে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে বেশির ভাগ দলের দাবি মেনে নিন- ডা. তাহের
- কতটি দল পিআর চায় তা প্রমাণে একটি জাতীয় বিতর্কের ব্যবস্থা করুন-গোলাম পরওয়ার
- প্রয়োজনে গণভোটের ব্যবস্থা করে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে- আকতার হোসেন
অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের আইনি ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় সরকারের বলে জানিয়েছেন জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কয়েকটি দলের নেতারা। সরকার যদি বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বিষয়টিতে পদক্ষেপ না নেয় তবে দাবি আদায়ে ঐক্যবন্ধ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা। গতকাল জামায়াত ইসলামী আয়োজিত 'জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের আইনি ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি ও আমাদের করণীয়' শীর্ষক সেমিনারে সেমিনারের বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিশন মিলনায়তনে এ সেমিনারে এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বেশির ভাগ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর একটি গণতান্ত্রিক দেশ পাওয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম তাতে হতাশা নেমে এসেছে। বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত যে জুলাই ঘোষণাপত্রের পর আমরা হতাশ হয়েছি। এখানে একটি দলের মতামত প্রাধান্য পেয়েছে বলে অনেকেই বলছেন। আগামী সংসদ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেবে এমন বক্তব্য দেওয়ায় তিনি বিএনপির দুই নেতার সমালোচনা করেন।
ডা. তাহের বলেন, অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। এক্ষেত্রে বিএনপিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে বেশির ভাগ দলের দাবি মেনে নিন। অন্যথায় জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ সাত দলের নেতাদের নিয়ে তিনি আন্দোলনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, এ দাবিতে বিএনপি ভার্সেস অন্যরা।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, কতটি দল পিআর চায় তা প্রমাণে একটি জাতীয় বিতর্কের ব্যবস্থা করুন। তিনি বলেন, তারা ফের ফ্যাসিবাদ চায় তারা পিআর চায় না। জুলাই ঘোষণাপত্র ও সদনের আইনি ভিত্তি চায় না। যারা সুষ্ঠু ভোট চায় না তারাই নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।
এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি) সদস্য সচিব আকতার হোসেন, বাংলাদেশের অতীত ইতিহাস প্রমাণ করে রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষে ক্রাইসিসে বলে যে আলোচনা করে ক্ষমতার পরে তা সবাই ভুলে যায়। এবারও যদি ঐকমত্য কমিশন একটি দলের কথায় জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের আইনি ভিত্তির ব্যবস্থা না করে তবে সরকার পার পাবে না। আইনি ভিত্তি না দিয়ে জেন্টেল এগ্রিমেন্টে কেউ বিশ্বাসী নন। প্রয়োজনে গণভোটের ব্যবস্থা করে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, গ্রামেগঞ্জে হাটবাজারে ক্ষুধার্ত শকুনদের ঠেকাতে পিআর পদ্ধতিতে ভোট দিতে হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। অন্যথায় আমরা বসে থাকব না। ঐকমত্য কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সেমিনারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন ও খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমাদ আব্দুল কাদেরও একই সুরে কথা বলেন। তারা দাবি আদায়ে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সেমিনারে জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম, হামিদুর রহমান আযাদ, রফিকুল ইসলাম খান, এহসানুল মাহবুব যোবায়ের বক্তব্য রাখেন। পাশাপাশি সরকার ও রাজনীতি এবং আইন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মতামত প্রদান করেন।
বিকেপি/এমবি