Logo

বিশেষ সংবাদ

ছাত্রদলের ১২ দাবি, অনড় শিবির-আপ

জকসু নির্বাচন ঘিরে দাবি-পাল্টা দাবি

জান্নাতুন নাইম

জান্নাতুন নাইম

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৮

জকসু নির্বাচন ঘিরে দাবি-পাল্টা দাবি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

    • নির্বাচন পেছাতে চায় না শিবির
    • সময় রেখে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের দাবি ছাত্রদলের
    • সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় আপ বাংলাদেশ 

আসন্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতি। নির্বাচনের তারিখ, আচরণবিধি ও অংশগ্রহণের শর্ত নিয়ে দাবি-পাল্টা দাবি তুলেছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন।

সোমবার (৩ নভেম্বর) পৃথক স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবির। একইসাথে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে শাখা আপ বাংলাদেশ।

এদিন জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসানের কাছে শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। যথাযথ সময় রেখে জকসু-২০২৫ এর তারিখ নির্ধারণ, এমফিল শিক্ষার্থীদের কেন বিধিমালা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে প্রশাসনের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা, এবং ছাত্রদলের ঘোষিত ধারাবাহিক কার্যক্রম চলমান রাখার সুযোগসহ ১২ দফা দাবি জানায় সংগঠনটি।

তাদের অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকারের বিষয়ে প্রশাসনের ব্যাখ্যা প্রদান; ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রকাশ; অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা; স্বচ্ছ গ্লাসের ব্যালট বাক্স ব্যবহার ও প্রতিটির আলাদা নম্বর সংযোজন; ব্যালট ছাপা, কাস্টিং ভোটার ও নষ্ট ব্যালটের সংখ্যা প্রকাশ; ভুল তথ্য উপস্থাপন করলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ; সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে অবাধ প্রবেশাধিকার দেওয়া; কোনো পোলিং এজেন্ট নিজ কেন্দ্র ত্যাগ বা অন্য কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারা; পোলিং এজেন্ট পরিবর্তনে প্রার্থীর অনুমতি বাধ্যতামূলক করা; আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন হলে নির্বাচনী আচরণবিধি স্পষ্ট করা ও ফাউন্ডেশনের চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ; ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যদের জন্য বিশেষ কার্ড প্রদান; নির্বাচনী প্রচারে কার্যকর কমিটির সব সদস্যের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা।

২৭ নভেম্বর নির্বাচনের দাবিতে অনড় শিবির
অন্যদিকে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের বিরোধিতা করে ঘোষিত ২৭ নভেম্বরেই নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির দাবি, নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই; এটি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ।

সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে শাখা ছাত্রশিবির জানায়, শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটাধিকারকে ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চলছে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘১৩ ডিসেম্বর থেকে ২১তম ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস—এসব আয়োজনের কারণে তখন নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলে কিংবা শীতকালীন ছুটি শুরু হলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে থাকবে না। তাই ২০ ডিসেম্বরের পর নির্বাচন করাও অবাস্তব।’

৫ দাবি আপ বাংলাদেশের
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২৭ নভেম্বরেই নির্বাচন করতে সক্ষম বলে মনে করছে শাখা ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। সংগঠনটির মতে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে সেটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা হবে।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, ‘নির্বাচনকে পেছানোর ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে।’

এ সময় তিনি পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো— ঘোষিত আগামী ২৭ নভেম্বরেই জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে; নির্বাচনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে; নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা বজায় রাখতে হবে; সব সংগঠনকে সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে; অরাজনৈতিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থী-বান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। 

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ৩৮ বছর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর আইন প্রণয়ন এবং ২৯ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। ৩০ অক্টোবর প্রকাশিত হয় নির্বাচনী আচরণবিধি। ২ নভেম্বর উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় খসড়া তফসিল প্রদর্শন করা হয়, যেখানে ঘোষিত ২৭ নভেম্বরের পরিবর্তে ১০ ডিসেম্বরের রোডম্যাপ দেখানো হয়। সেইদিনই শাখা ছাত্রশিবির সংবাদ সম্মেলন করে ২৭ নভেম্বরের নির্বাচনের দাবিতে অনড় অবস্থান স্পষ্ট করে।

এমএইচএস 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর