Logo

জাতীয়

ভূমিকম্পে সারা দেশে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, আহত ৬ শতাধিক

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৫, ২১:৫৫

ভূমিকম্পে সারা দেশে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০, আহত ৬ শতাধিক

ছবি : সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে বংশালের কসাইটুলি এলাকায় তিন পথচারী, রাজধানীর মুগদায় এক নিরাপত্তাকর্মী, রূপগঞ্জে এক শিশু, নরসিংদীতে এক শিশুসহ ৫ জন মারা গেছেন।

এদিকে ভূমিকম্পে আহত হয়ে ৬ শতাধিক মানুষ দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২০০ জন ভর্তি হয়েছেন।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে মোট ৬০৬ জন আহত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে এবং গুরুতর অবস্থায় ১৬ জনকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

তবে এর বাইরেও বহু রোগী দেশের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং কোথাও কোথাও ভর্তি রয়েছেন বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এই তথ্য এখনো হালনাদাগকৃত তথ্যে যুক্ত হয়নি।

ফলে আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা : পুরান ঢাকায় কসাইটুলিতে একটি ভবনের রেলিং ভেঙে পড়ে ৩ পথচারী নিহত হয়েছেন। তারা হলেন রাফিউল ইসলাম (আনুমানিক ২০ বছর), আব্দুর রহিম (৪৮) ও তাঁর ছেলে মেহরাব হোসেন (১২)। নিহতদের মধ্যে রাফিউল ইসলাম স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের শিক্ষার্থী বলে পরিবার জানিয়েছে।

আব্দুর রহিমের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রকোনায়। তিনি সুরিটোলা স্কুলের পেছনে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

এ ছাড়া মুগদার মদিনাবাগে ভূমিকম্পে নির্মীয়মাণ ভবনের রেলিং ধসে মাথায় পড়ে মাকসুদ (৫০) নামের এক নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে মুগদা মদিনাবাগ মিয়াজি গলিতে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়রা তাঁকে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নারায়ণগঞ্জ : জেলার রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে ফাতেমা নামে ১০ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ইসলামবাগ ৫ নম্বর ক্যানেল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নরসিংদী : সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকায় নির্মীয়মাণ ভবনের দেয়াল থেকে ইট ধসে পাশের বাড়ির ছাদের ওপর পড়ে। এতে ওই বাড়ির সানশেড ভেঙে মো. ওমর (৮), তার বাবা দেলোয়ার হোসেন ও দুই বোন আহত হয়। তাদের প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাবা ও ছেলেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নিয়ে গেলে ছেলে মো. ওমরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা দেলোয়ার হোসেনও মারা গেছেন।

পলাশ উপজেলার মালিতা পশ্চিমপাড়া গ্রামের কাজেম আলী ভূঁইয়া (৭৫) মাটির ঘরের দেয়ালের নিচে চাপা পড়েন। সেখান থেকে তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে নরসিংদী ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অপরদিকে শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসাইন জানান, ভূমিকম্পের সময় গাছ থেকে পড়ে আহত হন শিবপুর উপজেলার ইউনিয়নের আজকীতলা পূর্বপাড়া গ্রামের শরাফত আলীর ছেলে ফোরকান মিয়া (৪৫)। আহত অবস্থায় তাঁকে উপজেলা হাসপাতালে আনার পর মারা যান তিনি।

ডাঙ্গা ইউনিয়নের ইসলামপাড়া নয়াপাড়ার বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন (৬৫) ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন।

আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। ভূমিকম্পটিকে মাঝারি মাত্রার বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

  • এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

ভূমিকম্প নিহত

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর