
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১৬:৩৪
-683ecf99ef8af.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি পোশাক কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ওই কারখানার প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত শতাধিক শ্রমিক এবং ২১ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
পুলিশের একটি এপিসি গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে ২৩ জন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নতুনবাজার এলাকায় ডিবিএল গ্রুপের জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানায় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এই ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।
কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে অপমানজনিত কারণে এক শ্রমিক কারখানার আটতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনার বিচার দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করে সহকর্মীরা।
বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ বাধা দিলে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কারখানার কিছু আসবাবপত্র এবং পুলিশের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আবারও উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
শ্রমিকদের দাবি, নিহত শ্রমিক জাকির ছুটি চাইতে গেলে কর্তৃপক্ষ দুর্ব্যবহার করেন। অপমানে তিনি আত্মহত্যা করেন।
অন্যদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, পারিবারিক কলহজনিত হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
শ্রমিক রতন জানান, ‘দুর্ব্যবহারের কারণে আমাদের এক সহকর্মী আত্মহত্যা করেছেন। আমরা তার বিচারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম। কিন্তু পুলিশ হঠাৎ টিয়ারশেল ছুড়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।’
আরেক শ্রমিক বলেন, ‘কারখানায় আগে থেকেই আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হতো। এসবের বিচার না করে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।’
জিন্নাত নিটওয়্যারের এজিএম জুবায়ের বাসার বলেন, ‘নিহত শ্রমিক ছুটি চাইতে আসেননি। বরং পারিবারিক কলহের কারণে তিনি হতাশায় ছিলেন।’
শিল্প পুলিশের গাজীপুর শ্রীপুর সাব জোনের পরিদর্শক মো. আব্দুল লতি বলেন, ‘শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের ছত্রভঙ্গ করি। এ ঘটনায় ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারিক বলেন, ‘শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে। এ ঘটনায় ২৩ শ্রমিককে আটক করা হয়েছে।’
পুলিশ দাবি করেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৩৮টি সাউন্ড গ্রেনেড ও ১৯টি টিয়ারশেল ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এতে কেউ গুরুতর আহত হয়নি বলে পুলিশের ভাষ্য।
আতাউর রহমান সোহেল/এআরএস
প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন
সম্পর্কিত
পঠিত
মন্তব্য করুন