চাঁদা না পেয়ে স্বামীর সামনে নারীকে শ্লীলতাহানি, আতঙ্কে পরিবার

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:২১

শ্লীলতাহানি ও মারধরের মামলার আসামি।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চাঁদা না পেয়ে স্বামীর সামনে তার স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি ও মারধরের ঘটনায় হওয়া মামলায় বাদল মিয়া বাঁধন (৩২) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তবে এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে প্রধান আসামি ওসমান মিয়া। তিনি এলাকায় পিস্তল ওসমান নামেই পরিচিত। তার ভয়ে আতঙ্কে জীবন পার করছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৩ এপ্রিল) উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের সরিষাদাইড় গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী শহিদুর রহমান সম্প্রতি স্থানীয় একটি পুকুর কেনেন। এসময় তার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে পিস্তল ওসমান, বাঁধনসহ তাদের সহযোগীরা। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ওই রাতেই শহিদুর ও তার ছেলে হাসানকে বেধড়ক মারধর করে হামলা চালায়।
এসময় তার ছেলের হাতও ভেঙে দেয়। ঘটনার সময় অভিযুক্তরা শহিদুরের স্ত্রীকে স্বামী-সন্তানের সামনেই শারীরিকভাবে শ্লীলতাহানি করে। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তারা ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়। পরে তাদের আহতাবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়নাল হক মারধর থামাতে গেলে তাকে হাতে রড দিয়ে আঘাত ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
এ ঘটনার পর চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শহিদুর রহমান নিজেই বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই বাঁধন নামের আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে যায় মামলার প্রধান আসামি পিস্তল ওসমান। অভিযোগ উঠেছে তার আতঙ্কে প্রতিদিন দুর্বিষহ জীবন পার করছে পরিবারটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পিস্তল ওসমান ও বাঁধনের নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তবুও প্রতিনিয়ত তারা অপরাধমূলক সব কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে। তারা ভাওড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান খান সাঈদের আস্থাভাজন। তার ক্ষমতার বড়াই দেখিয়ে তারা প্রকাশ্য দিবালোকে দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তল ঠেকিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা-স্বর্ণালঙ্কারসহ পুরো এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল।
এছাড়া ভাওড়া এলাকায় গেল ৩ বছর আগে এক এনজিও’র মালিককে পিস্তল ঠেকিয়ে ২৫ লাখ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া, পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছেলে-মেয়েকে ফাঁসিয়ে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ, রবি মেম্বার নামের ব্যক্তির কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে ৮ লাখ টাকা ছিনতাই, মাদকদ্রব্য সেবন ও বিক্রির মত নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করে আসছিল তারা। তাদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি জানায় এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।’
রাব্বি ইসলাম/এমআই
সম্পর্কিত
পঠিত
মন্তব্য করুন